টক্সিক নারীবাদীদের থাকে এই ৫টি বৈশিষ্ট্য

বর্তমান সময়ে ‘নারীবাদ’ শব্দটি শুধুমাত্র নারী অধিকারের দাবি হিসেবে সীমাবদ্ধ নেই। এটি নানা মতাদর্শ, চর্চা এবং দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বিবিধ পথে গিয়েছে। এর মধ্যে একটি নতুন চর্চা সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে, যেটিকে অনেকেই ‘টক্সিক নারীবাদ’ নামে অভিহিত করছেন। সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এক বিশ্লেষকের মতে, এই চর্চার রয়েছে পাঁচটি স্পষ্ট বৈশিষ্ট্য। নিচে তার পর্যবেক্ষণের সারাংশ তুলে ধরা হলো।

১. প্রজ্ঞার ঘাটতি

টক্সিক নারীবাদীদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে প্রজ্ঞার অভাবকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা যুক্তিগ্রাহ্য এবং বাস্তবভিত্তিক যে কোনো ইস্যুকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে জটিল করে তোলে। আবেগতাড়িত সিদ্ধান্ত গ্রহণ তাদের মাঝে বেশি লক্ষণীয়। পরিস্থিতি বুঝে চলার পরিবর্তে তারা হঠকারী ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার পথ বেছে নেয়।

২. পরিণতি বিবেচনার অভাব

টক্সিক নারীবাদীরা তাদের কর্মকাণ্ডের সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে খুব কমই চিন্তা করেন। অনেক সময় ঘটনা ঘটার পরে তাতে তারা অনুতপ্ত হন বা এর দায় স্বীকার না করে বরং নির্লিপ্ত থাকেন। দায়িত্বশীল আচরণ তাদের নীতিতে জায়গা পায় না।

৩. ‘কুল’ হওয়ার অদ্ভুত প্রয়াস

‘আধুনিক’ বা ‘মুক্তমনা’ প্রমাণ করার জন্য টক্সিক নারীবাদীরা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ওপর অতিরিক্ত জোর দেন। যেমন:

  • পাবলিক প্লেসে ধূমপান করা
  • মাসিক (পিরিয়ড) নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা
  • খোলামেলা পোশাক পরিধান

এইসব বিষয়কে নারীর অধিকার কিংবা স্বাধীনতার চিহ্ন হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টায় নারীবাদের মূল ইস্যুগুলো— যেমন সমান অধিকার, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান—পিছনের কাতারে পড়ে যায়।

৪. ভিকটিম ভাব দেখানো

সামাজিক বা ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে কোনো আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ হলে, টক্সিক নারীবাদীরা নিজেদের ভুল স্বীকার না করে বরং নিজেকে ভিকটিম হিসেবে তুলে ধরেন। তাদের প্রবণতা হলো সমস্ত দোষ সমাজ, ধর্ম বা পুরুষতন্ত্রের ওপর চাপানো। এর মাধ্যমে তারা জবাবদিহিতা এড়িয়ে চলেন।

৫. একচেটিয়া নারীবাদের দাবি

এই গোষ্ঠী মনে করে, শুধুমাত্র তারাই ‘আসল’ ফেমিনিস্ট। কেউ যদি নারীবাদ নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করে, তবে তাকে তারা ‘নারীবাদ বিরোধী’ হিসেবে বাতিল করে দেয়। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে সহনশীলতার ঘাটতি রয়েছে এবং নারীবাদের বহুমাত্রিক চিন্তাকে তারা অগ্রাহ্য করে।

টক্সিক নারীবাদ কোনো সুস্থ বোধবুদ্ধি সম্পন্ন আন্দোলনের অংশ নয়। বরং এটি একধরনের অন্ধ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আচরণের বহিঃপ্রকাশ, যা সামাজিক কাঠামো এবং ধর্মীয় সংবেদনশীলতার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করে। বাস্তববাদী, সচেতন ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন নারীবাদই পারে নারীর প্রকৃত মর্যাদা, অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply